logo
Friday , 17 February 2023
  1. সকল নিউজ

চাকরি নিয়ে প্রতারণা বিশ্বাস অর্জনে উপ-সচিব পরিচয়, ব্যবহার করেন গাড়ি

প্রতিবেদক
admin
February 17, 2023 11:49 am

পরিচয় ফেসবুকে। আর এই পরিচয়ের সূত্র ধরে আরিফ সরকারকে চাকরি দেওয়ার কথা বলেন সুমন পাল। তাও আবার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে চাকরি। বিশ্বাস অর্জনের জন্য নিজেকে পরিচয় দেন ওই মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব হিসেবে। এমনকি একটি গাড়িও ব্যবহার করেন।

আর এসব দেখে চাকরির জন্য রাজি হয়ে যান আরিফ। কিন্তু তাকে চাকরি পেতে হলে দিতে হবে দুই লাখ টাকা। কিন্তু এত টাকা দেবেন কীভাবে? বিষয়টি জানালে তাকে একবারে না দিয়ে কয়েক বারে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এভাবে প্রথম দফায় নেওয়া হয় ৪০ হাজার টাকা। এরপর মেডিকেল পরীক্ষার কথা বলে নেওয়া হয় আরও ৪০ হাজার টাকা।

এরপর আরিফকে জানানো হয় তার চাকরি হয়েছে। তাই নিয়োগপত্র পেতে আরও টাকা লাগবে বলে জানান সুমন পাল। এছাড়া আরও লোক নিয়োগ দেওয়া হবে বলে আরিফকে জানান তিনি। বিষয়টি আরিফ আবার কয়েকজনকে বলেন। তারাও চাকরির জন্য দেন টাকা।

শেষপর্যন্ত প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশকে খবর দেন ভুক্তভোগীরা। আর পুলিশ এসে সুমন পাল (৬৭) ও তার সহযোগী মো. মুন্নাকে (২২) গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের তেলিরচালা এলাকার চৌরাস্তা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা হয়েছে। গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে জেলহাজতে।

 

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৮-৯ মাস আগে সুমন পালের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় আরিফ সরকারের। এর সুবাদে আরিফকে সুমন পাল জানান, তিনি তাকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে চাকরি দিতে পারবেন। এরপর সুমনের সহযোগী মুন্না প্রাইভেটকারে করে আরিফকে নিয়ে যান কালিয়াকৈরের মৌচাক ও তেলিরচালা এলাকায়। সেখানে দেখা হয় সুমন পালে সঙ্গে।

তখন তাকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরির প্রস্তাব দেন সুমন। এর বিনিময়ে দুই লাখ ৮০ হাজার দিতে হবে বলে জানান। এরপর দুই মাস আগে সুমন পাল ভিকটিমের কাছ থেকে এসএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেটের ফটোকপি, এনআইডির ফটোকপি, ছবি এবং নগদ ৪০ হাজার টাকা নেন।

৪ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমকে ঢাকার ফার্মগেটে আল রাজি হাসপাতালে নিয়ে মেডিকেল পরীক্ষা করানো হয়। এসময় আরও ৪০ হাজার টাকা নেওয়া হয় তার কাছ থেকে। এরপর চাকরি হয়েছে, তাই আরও দুই লাখ টাকা দিলেই নিয়োগপত্র ও আইডি কার্ড দেওয়া হবে বলে জানান সুমন পাল। এছাড়া আরও অনেককে চাকরি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

একপর্যায়ে পরিচিত আ. মালেক, মো. সজিব মিয়া, শাহীন আলমকে বিষয়টি বলেন আরিফ। তারাও একইভাবে সুমন পালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর চাকরি দেওয়ার কথা বলে খালেকের কাছ থেকে এক লাখ ৮০ হাজার, সজিব মিয়ার কাছ থেকে এক লাখ ১০ হাজার এবং শাহীন আলমের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নেন সুমন পাল। পরে মামলার বাদী আরিফ সরকারকে আরও দুই লাখ টাকা দিয়ে নিয়োগপত্র ও আইডি কার্ড নেওয়ার জন্য বার বার চাপ দিতে থাকলে তাদের সন্দেহ হয়।

 

এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি কালিয়াকৈরের তেলিরচালা চৌরাস্তার চন্দ্রাগামী রাস্তার ওভার ব্রিজের দক্ষিণ পাশে সবুজ ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসিং সেন্টারে সামনে সুমন পাল এলে পুলিশে খবর দেন ভিকটিমরা। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে।

গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই রকিবুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের হেফাজত থেকে দুটি আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়, যাতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের লোগো রয়েছে। এছাড়া দুটি নিয়োগপত্র, একটি সাদা রঙের প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।

সর্বশেষ - সকল নিউজ