logo
Monday , 5 December 2022
  1. সকল নিউজ

দেশ বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে: সেতুমন্ত্রী

প্রতিবেদক
admin
December 5, 2022 9:27 am

চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আওয়ামী লীগের জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের অন্তত ৩০ জন নেতা বক্তব্য দেন। প্রত্যেকের বক্তব্যেই ছিল আগামী জাতীয় নির্বাচন। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। গণতন্ত্র ও উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।’

তিনি বলেন, এই দেশ মাস্টার দা সূর্যসেনের দেশ, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের দেশ, এমএ আজিজের দেশ, মহিউদ্দিন চৌধুরীর দেশ। যতদিন বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ড থাকবে ততদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বঙ্গবন্ধুর নাম। গত ৪৭ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে সৎ রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা, বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতার নাম শেখ হাসিনা, দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর দেশের সবচেয়ে সাহসী নেতার নাম শেখ হাসিনা, সফল কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা, ধ্বংস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে যিনি সৃষ্টির পতাকা উড়ান তিনি হচ্ছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ হিসাবে আছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞায় কিছুটা বিপদে আছি। এ বিপদ থেকেও তিনি আমাদের উদ্ধার করবেন। তিনি সারারাত ঘুমান না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি বলেন- সরকারের ঘুম নষ্ট হয়ে গেছে। আরে ঘুমটা তো আসলে নষ্ট হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার। দেশের মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, শান্তিতে ঘুমাতে পারে, সেই চিন্তায় শেখ হাসিনা ঘুমাতে পারেন না।’

জনসভায় বিপুল জনসমাগম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘খেলা হবে। বীর চট্টলা তৈনি। ফখরুল সাহেব, আমীর খসরু সাহেব আপনি এসে দেখে যান। আট সমাবেশের সমান লোক হয়েছে। ইতিহাস সৃষ্টি করেছে শেখ হাসিনার পলোগ্রাউন্ডের মহাসমাবেশ। এক মহাসমুদ্র! কর্ণফুলীর সব ঢেউ আজ পলোগ্রাউন্ডে, বঙ্গোপসাগরের ঢেউ আজ এখানে। চট্টগ্রাম শহরে এসে দেখে যান। বীর চট্টলা জেগেছে। কান পেতে শুনুন মহাসাগরের গর্জন। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। গণতন্ত্র, উন্নয়ন, অর্জনের জন্য শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। খেলা তো হবেই। এই ডিসেম্বরেই খেলা হবে।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, যারা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, সেই দলের নাম বিএনপি-বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। কর্মীরা কষ্ট করে বিএনপির সমাবেশে আসে, তাঁবু টানিয়ে, মশার কামড় খেয়ে, লোটা-কম্বল নিয়ে পড়ে থাকে। আর ফখরুল সাহেবরা থাকেন এসি রুমে। তাদের কাছে শুধু টাকা আর টাকা। দুবাইয়ের টাকা। টাকার বস্তা নিয়ে সমাবেশ করেন তারা।’ 
বিএনপিকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংবিধান সংশোধনের দিবাস্বপ্ন ভুলে যান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভুলে যান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর হবে না।’

দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, গত ১৪ বছরে চট্টগ্রামের দৃশ্যপট বদলে গেছে। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের জন্য অনেক উন্নয়ন করেছেন। এই ঋণ আমরা চট্টগ্রামবাসী কোনো দিন শোধ করতে পারব না। একটি বিষয় কালুরঘাট সেতু, আপনি মরহুম এমপি বাদল ভাইকে আমার সামনে কথা দিয়েছিলেন- সেতুটি করে দেবেন। আমরা জানি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ডেডিকেটেড রেললাইন হচ্ছে। কালুরঘাটে রেলসেতুর সঙ্গে একটি ডেডিকেটেড সড়ক সেতুর ঘোষণা আপনার কাছ থেকে চট্টগ্রামবাসী শুনতে চায়।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জিয়া এবং খালেদা বাংলাদেশকে হত্যার লীলাভূমিতে পরিণত করেছিল। গ্রেনেড হামলা করে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে আনতে গিয়ে বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। বিএনপি ১০ ডিসেম্বর ঢাকা দখলের তর্জন-গর্জন করছে। কিন্তু তাদের মনে রাখতে হবে ইট মারলে পাটকেলটি খেতে হবে। 

আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বলেন, সাংবিধানিক পন্থায় নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হবেন শেখ হাসিনা। তিনি রুটিন ওয়ার্ক করবেন। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী হবেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে দিবা স্বপ্ন বিএনপি দেখছে তা কখনোই বাস্তবায়ন হবে না। সংবিধান বিলুপ্তির কোনো সুযোগ নেই।

প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, জিয়া পরিবার খুনি পরিবার। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯ বার হত্যাচেষ্টা করেছে তারা। খালেদা-তারেক এই হত্যাচেষ্টার কারিগর। ১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা মাঠে থাকবে। বিএনপি বুড়িগঙ্গায় নিক্ষিপ্ত হবে।

দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ পাকিস্তানিরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স) আত্মসমর্পণ করেছিল। বিএনপি ১০ ডিসেম্বর নাকি ঢাকা দখল করবে। ১০ তারিখে বিএনপি ও অগ্নিসন্ত্রাসীরা ঢাকার বুকে আত্মসমর্পণ করবে ইনশাআল্লাহ, যেইভাবে পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করেছিল। গত ১৪ বছরে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বে এই চট্টগ্রাম বদলে গেছে। কদিন পরেই আমাদের নেত্রী দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম রোড টানেল উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম আজকে বদলে গেছে। 

বে-টার্মিনাল করে চট্টগ্রাম বন্দরের দ্বিগুণ আরেকটি বন্দর নির্মিত হতে যাচ্ছে। কুতুবদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দরের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। কদিন আগে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন চট্টগ্রামে মেট্রোরেল হবে। চট্টগ্রামের পাতাল দিয়ে রেল চলবে। গত ১৪ বছরে লক্ষ কোটি টাকার বেশি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এই চট্টগ্রামে হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে আরও লক্ষ কোটি টাকার উন্নয়ন এই চট্টগ্রামে হবে। 

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, বিএনপি ১০ ডিসেম্বরের ভয় দেখাচ্ছে। জনগণের সমর্থন থাকলে তারা কেন সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করতে ভয় পাচ্ছে। পল্টনের মতো গলি কেন তাদের পছন্দ। ১০ ডিসেম্বর থেকে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগের দখলে। 

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, চট্টগ্রামে পিপির ভিত্তিতে একটি প্রাইভেট হাসপতাল করার পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু চট্টগ্রামের মানুষ সিআরবিতে সেই হাসপাতাল স্থাপনের বিরোধিতা করেন। তাদের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সিআরবি ব্যতীত রেলের অন্য জায়গায় এই হাসপাতাল করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জনগণের ইচ্ছার মূল্য দিতে পারেন।

হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বলেন, ২০২৪ সালে যে নির্বাচন হবে সে নির্বাচনে দেশের মানুষ আবারও আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে। সারা দেশে উন্নয়নের যে জোয়ার প্রধানমন্ত্রী বইয়ে দিয়েছেন তার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ দেশবাসী এর প্রতিদান দেবে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৪ বছরে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। সারা দেশে অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছেন। 

সর্বশেষ - সকল নিউজ