তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের সরকারের অভিযানে যখন জঙ্গি সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হচ্ছিল, তখন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, কিছু মানুষকে ধরে আটকে রেখে তাদের চুল-দাঁড়ি লম্বা হলে জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হয়, আসলে জঙ্গি নেই। সুতরাং এই দেশে জঙ্গি আশ্রয়দাতা, প্রশ্রয়দাতা, অর্থদাতা হচ্ছে বিএনপি। সেই জঙ্গিরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।
রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে সোমবার বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ফখরুল-তারেক গংদের দেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আদালত থেকে আসামি ছিনতাই করা হয়েছে। চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। কাঁচপুর ব্রিজের নামফলক পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তারা আবার জ্বালাও-পোড়াও, নৈরাজ্য শুরু করেছে। তাদের মদদে এবং পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গিগোষ্ঠী, সন্ত্রাসীবাহিনী, মৌলবাদীরা আবার ডালপালা মেলেছে। সুতরাং এই জঙ্গিগোষ্ঠীর আস্ফালন আর বিএনপির নেতৃত্বে সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা একসূত্রে গাঁথা।
ড. হাছান বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব কিছুদিন আগে ঠাকুরগাঁওয়ে তার পৈতৃক বাড়িতে বসে বলেছেন-পাকিস্তানই ভালো ছিল। কারণ মির্জা ফখরুল সাহেবের বাবা পাকিস্তানপন্থি ছিলেন বিধায় দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বেশকিছু দিন আত্মগোপনেও ছিলেন। একই সঙ্গে মির্জা ফখরুল সাহেবও কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন বলে আমি শুনেছি।
তিনি আবার ঘোষণা করেছেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আরেকটি যুদ্ধ করে আবার দেশকে স্বাধীন করবেন। অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ যে স্বাধীন হলো, সেটি তাদের পছন্দ হয়নি। সেজন্য আবার একটি যুদ্ধ করে দেশটাকে তারা পাকিস্তান বানাতে চায়। এর প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আজ যে মানববন্ধন আয়োজন করেছে, আমি মনে করি-এটি একটি যথার্থ আয়োজন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ছোটবেলায় বর্গিদের কিচ্ছা শুনে যেমন পিলে চমকে উঠত, এখন তারেক জিয়াও সেরকম একটি নাম। তারেক জিয়ার নাম শুনলে মানুষের মনে পড়ে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা। তার নেতৃত্বে দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়া, হাওয়া ভবন-খোয়াব ভবনের কথা, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের কথা। এই দুর্নীতি, সন্ত্রাস-নৈরাজ্য এবং অপশাসনের প্রতীক তারেক রহমান তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাকে নিয়ে নাকি তারা যুদ্ধ করবেন। সুতরাং এই অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকায় এসে নাকি ঢাকা দখল করবে। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবসে পাকিস্তানিরা এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করেছিল। আর ১০ ডিসেম্বর এই পাকিস্তানপন্থি বিএনপি নেতারা যখন ঢাকা শহরে আসবে, তাদের মানুষ আত্মসমর্পণ করাবে। তারা সারা দেশ থেকে সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে এখানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাবে, সেটি বাংলাদেশের মানুষ, ঢাকা শহরের মানুষ হতে দেবে না।
যেভাবে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের শিল্পী সমাজ, সাংস্কৃতিককর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল, স্বাধীনতাসংগ্রামে অগ্রভাগে ছিল, আজও তাদের আহ্বান জানাই এই অপশক্তিকে রুখে দেওয়ার জন্য।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সহসভাপতি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, অধ্যাপক ডা. অরূপরতন চৌধুরী, চিত্রনায়িকা অরুণা বিশ্বাস, চিত্রনায়ক শাকিল খান, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক অভিনেত্রী তারিন জাহান, তানভীন সুইটি, সঞ্জিতা চৌধুরী, সিআইপি ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হালদার, সাংবাদিক সুজন হালদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক লায়ন মুহাম্মদ মীযানুর রহমান, আশরাফুজ্জামান মিতু মাতবর, সংগীতশিল্পী লিসা কামাল, অভিনেতা রাজ সরকার, অভিনেত্রী পারুল আক্তার রূপা, সনিয়া পারভীন শাপলা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রব্বানী প্রমুখ।