রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধে বারবারই আসছে ইরানের ড্রোনের কথা। এবার যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়ার অধিকৃত ইউক্রেনের ক্রিমিয়ায় ইরানের সামরিক বিশেষজ্ঞরা অবস্থান করছেন। তারা ইউক্রেনে রুশ ড্রোন হামলায় সহায়তা করছেন বলেও অভিযোগ হোয়াইট হাউজের।
যুক্তরাষ্ট্রের এক মুখপাত্র বলেছেন, ইরানের সামরিক বাহিনীর যে সদস্যরা ক্রিমিয়ায় আছেন, তারা প্রশিক্ষক ও প্রযুক্তি সহায়ক। তবে ইরানের তৈরি ড্রোনগুলো চালাচ্ছেন রুশ বাহিনীর সদস্যরা।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে সোমবার ‘কামিকাজে’ ড্রোন হামলা চালানো হয়। এসব ড্রোন ইরানের কাছ থেকে পেয়েছে রাশিয়া, এমন দাবি করে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র।
এ অভিযোগে, যুক্তরাজ্য ইরানের ব্যবসা ও ড্রোন সরবরাহের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য হলো, ক্রিমিয়ায় ইরানের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা আছেন। তারা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযানে রাশিয়াকে সহায়তা করছেন। তারা প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছেন এসব ড্রোন চালাতে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, তেহরান এখন প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত। অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিক ও অবকাঠামোর ক্ষতি করছে তারা। তিনি আরও বলেন, ‘ইরানের ইউক্রেনের জনগণের বিরুদ্ধে এই অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবস্থা করার ব্যাপারে প্রতিরোধ এবং মোকাবিলা করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব উপায় অবলম্বন করবে।
ইউক্রেনে নতুন করে রুশ হামলায় সম্প্রতি আরও ২৫ জন নিহত ও একশ জনের মতো আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাজধানী কিয়েভ বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর সবচেয়ে বড় আক্রমণাত্মক ছিল এই হামলা। গত ১০ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের রাজধানীসহ অন্তত ১০টি অঞ্চলে রুশ হামলা শুরু হয়। বলা হচ্ছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলাসহ, এসব ঘটনায় ব্যবহার হয়েছে ইরানের তৈরি ড্রোন।
ইউক্রেন হামলায় ব্যবহৃত এসব ড্রোন চিহ্নিত করেছে দেশটি। এগুলো মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি)-কে ইরানি শহীদ-১৩৬ অস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মঘাতী অভিযান চালানো জাপানি যোদ্ধা পাইলটদের নামানুসারে এগুলোকে কামিকাজে ড্রোনও বলা হয়। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে যে তারা একদিনে কমপক্ষে ৩৭টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। তবে রাশিয়াকে এই অস্ত্র সরবরাহ করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে ইরান।
ইউক্রেন বলছে যে রাশিয়া ইরান থেকে ড্রোনগুলো আমদানি করেছে, যেখানে এগুলো শহীদ-১৩৬ নামে পরিচিত, যেটিকে ‘বিশ্বাসের সাক্ষী’ বা ‘শহীদ’ হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক তেহরানকে ‘ইউক্রেনীয়দের হত্যার’ জন্য দায়ী করেছেন। তবে এ বিষয়ে ক্রেমলিন কোনো মন্তব্য করেনি। তবে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর উপস্থিতিকে যুদ্ধের মূল কারণ বলছে ইরান।