স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, প্রবাসীদের জান-মালের নিরাপত্তায় সরকার বদ্ধপরিকর। যে কোন জেলায় প্রবাসীদের যাতায়াত, বসবাস কিংবা তাদের সম্পত্তির সুরক্ষায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি রাখতে স্ট্যান্ডিং অর্ডার রয়েছে। তারপরও ছুটিতে বা বেড়াতে আসা কোন প্রবাসী কিংবা দেশে থাকা তাঁর পরিবারের সদস্যরা কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির আশঙ্কা করলে ৬৪ জেলায় থাকা প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। ৯৯৯ -এ ফোন দিতে পারেন, প্রয়োজনে থানায় এমনকি ডিসি-এসপির সাথে দেখা করতে পারেন। প্রবাসীদের অভিযোগ, তাদের সহায়-সম্পদ রক্ষায় প্রশাসন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিবে।
সেন্টার ফর নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশি, এনআরবি এর চেয়ারপারসন এম এস সেকিল চৌধুরী এবং সফররত যুক্তরাজ্যের ক্রয়ডন সিটির মেয়র শেরওয়ান চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে মন্ত্রী এসব আশ্বাস দেন। সম্প্রতি সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দপ্তরে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে এনআরবির চেয়ারপার্সন এম এস সেকিল চৌধুরী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন,মহামারীর মধ্যেও প্রবাসীদের হয়রানী বন্ধ নেই। তারা কষ্ট করে নিজে খেয়ে না খেয়ে দেশে অর্থ পাঠান পরিবার পরিজনের সুখ এবং ভবিষ্যতের নিশ্চয়তায়।
তাদের কষ্টার্জিত অর্থে দেশের বৈদেশিক রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে। অথচ বিমানবন্দর থেকে শুরু করে ঘর অবধি প্রবাসীরা নানামুখী যন্ত্রণার শিকার হন। তাদের সম্পদে লোলুপ দৃষ্টি থাকে নিকটজন থেকে শুরু করে প্রভাবশালী দুষ্ট লোকদের। করোনার এই চ্যালেঞ্জের বছরেও ২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স প্রবাসী এবং নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশিরা পাঠিয়েছেন স্মরণ করে এনআরবির চেয়ারপা্রসন বলেন, তাদের যাতায়াতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই। পুলিশ তৎপর থাকলে পরিস্থিতি জটিল হয়না। প্রবাসীদের জীবন ও সম্পদের সুরক্ষায় সর্বমহলে সচেতনতা অপরিহার্য বলে বক্তব্য রাখেন এম এস সেকিল চৌধুরী।
বৈঠকে বৃটেনের ক্রয়ডন সিটির মেয়র শেরওয়ান চৌধুরী বলেন, বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানী অনেকটাই কমেছে। তবে তা নির্মুল হয়নি। অনেকে দেশ থেকে ফিরে তার কাছে দুর্বিষহ স্মৃতি এবং কষ্টকর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন জানিয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মেয়র বলেন, মানব সম্পদ রফতানিতে বহির্বিশ্বে বাংলাদশের ব্যাপক সুনাম রয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি হোস্ট কান্ট্রিগুলোর উন্নয়নেও তারা বলিষ্ঠ ভুমিকা রেখে চলেছেন। প্রবাসী বিশেষত নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশিরা একান্ত নাড়ির টানে বাংলাদেশে আসেন জানিয়ে মেয়র বলেন, উন্নত দেশগুলোতে এখন বাংলাদেশির তৃতীয় প্রজন্মের বাস। দেশে ফেরা তাদের জন্য জরুরি নয়, কিন্তু স্বজন এবং দেশের মায়ায় তারা এখানে বেড়াতে আসেন। বেড়াতে আসার আগে পরে এবং ভ্রমণকালে তারা অর্থ খরচ করেন, যা গ্রাম এবং শহরের বাজার ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করে।
বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা এম এস সেকিল চৌধুরী এবং শেরওয়ান চৌধুরীর বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে শুনেন। মন্ত্রী এ বিষয়ে প্রবাসী নিরাপত্তায় পুলিশি প্রচেষ্টায় দৃশ্যমান পরিবর্তন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আখতার হোসাইন, মন্ত্রীর একান্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান , প্রবাসী আবুল হোসেন, রফিকুল হায়দার ও আব্দুল হালিম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সেন্টার ফর এনআরবি’র ওয়া্রল্ড কনফারেন্স সিরিজ ২০২২ এর ব্রান্ডিং বাংলাদেশ এর বিশ্বব্যাপী কাযর্ক্রম তুলে ধরতে প্রতিনিধিবৃন্দ আইনমন্ত্রী, অর্থ উপদেষ্টা, এমব্যাসেডর এট লার্জ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব সহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে সাক্ষাত করেন।